ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: আগামী ৯ ফেব্রুয়ারী জোড়া কর্মসূচীতে বর্ধমান আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মাঝে হাতে গোনা মাত্র পাঁচদিন। স্বাভাবিকভাবেই বুধবার থেকে রীতিমত শুরু হয়ে গেল যুদ্ধকালীন প্রশাসনিক তৎপরতা। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ওইদিন কালনায় দলীয় কর্মসূচির পরই তিনি সরাসরি চলে আসবেন বর্ধমানে তাঁর স্বপ্নের মাটি তীর্থ কৃষি কথা প্রাঙ্গণে। আর অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে মাটি উৎসবের আয়োজন করতে বুধবার সকালে মাটি উৎসবের মাঠেই দুপুরের মিঠে রোদ গায়ে মেখে উচ্চস্তরের বৈঠক করলেন রাজ্য ও জেলা স্তরের প্রশাসনিক কর্তারা।
এদিন এই বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশীষ বন্দোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার সহ রাজ্য কৃষি দপ্তরের সেক্রেটারী এবং পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সমস্ত কর্তারা। এছাড়াও হাজির ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরাও। এদিন আশীষবাবু জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতই এবারও রাজ্য স্তরের এই মাটি উৎসবের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে ৯ ফেব্রুয়ারী থেকে এই মাটি উৎসব চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। তবে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই মেলার দিন কমবেশী হতে পারে।
এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২টায় মমতা বন্দোপাধ্যায় কালনায় একটি জনসভায় অংশ নেবেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে দুপুর ২টো নাগাদ তিনি মাটি উৎসব প্রাঙ্গণে আসবেন। প্রায় ১ ঘণ্টা তিনি থাকবেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতই এবারও মাটি উৎসব প্রাঙ্গণে থাকবে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের স্টল এবং সহায়তা কেন্দ্র। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এবং চোখের আলো প্রকল্পকে বিশেষভাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
কোভিডজনিত কারণে এবার ব্লক থেকে বিশেষ বিশেষ কৃষকদের নামের তালিকা তৈরী করা না যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী যে কৃষক সম্মান প্রদান করেন তা আকারে ছোট হতে পারে। যদিও শেষ মূহূর্তে এই সমস্ত প্রকল্পের অনেকটাই রদবদল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, যেহেতু হাতে সময় অত্যন্ত কম, তাই দ্রুততার সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণকে তৈরী করার কাজ এদিন থেকেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রথম দফায় মাটি উৎসব প্রাঙ্গণে এই বৈঠকের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিন বিকালে ফের বিডিএ সভাঘরে একপ্রস্থ আলোচনায় বসে প্রশাসন। কিভাবে দ্রুত উৎসব প্রাঙ্গণের কাজ শেষ করা যায় তা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ৯ ফেব্রুয়ারী এই মাটি উৎসবের উদ্বোধনের দিন জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে মোট প্রায় ১ লক্ষ জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে মাটি উৎসবের প্রাঙ্গণ সংশ্লিষ্ট বর্ধমান ১নং ব্লক এবং বর্ধমান ২নং ব্লকের কাছে বিশেষ দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্যনীয়, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জেলা কৃষি খামারের মধ্যে নির্মিত কৃষি ভবনের প্রসঙ্গ তুলে ধরতে গিয়ে কার্যত অবাক হয়ে যান। এদিনই তিনি জানতে পারেন, এই কৃষি ভবন এখন কোভিড হাসপাতাল হয়ে গেছে। অথচ এব্যাপারে কৃষি দপ্তরের কোনো অনুমতিই নেওয়া হয়নি। এমনকি কৃষি দপ্তরের কাছে এব্যাপারে কোনো সূচনাই নেই। যদিও কোভিড প্রসঙ্গ থাকায় এদিন গোটা বিষয়টিতে ছেদ পড়ে।
এদিন জেলা মুখ্য স্বাস্থাধিকারিক ডা: প্রবীর রায় প্রদীপবাবুকে জানান, বর্তমানে এই কৃষি ভবন তথা কোভিড হাসপাতালে ২জন রোগী রয়েছেন। এরপরই প্রদীপ মজুমদার এদিনই সেই দুজন রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করে কৃষি ভবনকে স্যানিটাইজ সহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। কারণ হিসাবে এদিন প্রদীপবাবু বৈঠকে তুলে ধরেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি জানতে পারেন মাটি উৎসবের অদূরেই কৃষি ভবনকে কোভিড হাসপাতাল করা হয়েছে এবং সেখানে এখনও করোনা রোগী রয়েছে তাহলে হয়ত তিনি নাও আসতে চাইতে পারেন। যদিও এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
0 comments:
Post a comment