
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের বীরপুরে লরীর ধাক্কায় দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোটা এলাকা। মৃত ছাত্রীর নাম মুসকান খাতুন (৭)। তার বাড়ি বর্ধমানের গোদা এলাকায় হলেও বর্তমানে সে বীরপুরে দিদিমার কাছেই থেকে মানুষ হচ্ছিল। এদিন সকাল ১০ টা নাগাদ বীরপুরের রাস্তা দিয়ে সে যাবার সময় বর্ধমান কাটোয়া রোডের একটি লরী পালিতপুর রাস্তা দিয়ে যাবার সময় ধাক্কা মারে মুসকানকে। ঘটনাস্থলেই সে লরীর চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত জনতা ঘাতক লরিটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এলাকার বাসিন্দারাই ধরে ফেলে ঘাতক লরীর চালককে।

এদিকে, এই ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় এবং পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হলে দেওয়ানদিঘী থানা থেকেও বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হলে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। ক্ষীপ্ত জনতা পুলিশ কর্মীদের একটি গ্যারেজে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এই ঘটনায় প্রায় ঘণ্টা দুয়েক রাস্তা অবরোধও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা এদিন অভিযোগ করেছেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিমূহূর্তেই ভারী লরী যাতায়াত করে। আর বিশেষত দেওয়ানদিঘী থানার পুলিশ সেই সমস্ত গাড়ি থেকে নিয়মিত তোলা আদায় করে। অনেক সময়ই গাড়িগুলি পুলিশী তাড়ায় দ্রুত বেগে যাতায়াত করতে গিয়ে এই ধরণের দুর্ঘটনাও ঘটছে। এর আগেও একইকারণে এই ধরণের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন – দাবী গ্রামবাসীদের। এদিন গ্রামবাসীরা কার্যত হাত জোড় করে পুলিশের এই তোলাবাজি বন্ধ করার আবেদনও জানান।
এদিন গ্রামবাসী মাখন মোল্লা জানিয়েছেন, প্রতিদিনই দেওয়ানদিঘী থানার পুলিশ এই রাস্তায় বালির গাড়ি, ধানের গাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারখানায় যাতায়াতকারী গাড়িগুলিকে ধাওয়া করে। তাদের কাছ থেকে তোলাবাজি করে। এমনকি এই রাস্তা দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে পড়া সত্ত্বেও রাস্তায় নেই কোনো ডিভাইডারও। বারবার গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বরং তারা তোলাবাজিতেই ব্যস্ত থাকেন। আর তার জেরেই এদিন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হল মুসকানকে।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, এদিন সকালে অন্যান্যদিনের মতই টিউশন পড়তে যায় ছোট্ট মুশকান। টিউশন থেকে ফিরে সে বাড়়িতে দিদিমাকে দেখতে না পাওয়ায় দিদিমার খোঁজ করতে বের হয়। আর তখনই এই দুর্ঘটনা ঘটে। মুসকান স্থানীয় বীরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
0 comments:
Post a comment