

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: প্রায় 10 বছর অতিক্রান্ত। তবু নতুন রেলপথের জন্য রেল দপ্তরকে চুক্তি মাফিক নিজেদের চাষের জমি দিয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন না পূর্ব বর্ধমান জেলার খানা জংশন থেকে বোঁয়াইচণ্ডী এলাকার প্রায় হাজার খানেক চাষী। উপরন্তু এতগুলো বছর পেরিয়ে বর্ধমানের খানা জংশন থেকে বোঁয়াইচণ্ডী পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিমি রেলপথ নির্নানের কাজ কার্যতঃ বিশবাও জলে। ফলে ক্রমশই বাড়ছে উৎকণ্ঠা জমিদাতাদের।

সরকারী নিয়মানুযায়ী সেই সময় তাঁদের ৩ লক্ষাধিক টাকা বিঘা প্রতি জমির ক্ষতিপূরণের দাম দেওয়া হয়। কিন্তু চাষীরা জমির দাম নিয়ে খুশী ছিলেন না। শুরু হয় কিছু চাষীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। পরবর্তীকালে জমিদাতাদের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবারের একজনকে চাকরি দেবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় রেল দপ্তর থেকে। কয়েকদফায় এব্যাপারে প্রশাসনিক বৈঠক হয় তৎকালীন বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কারসিং মীনার আমলে। এরপরেই কিছু চাষী জমির ক্ষতিপূরণের টাকা গ্রহণ করলেও সিংহভাগ চাষীই এখনো সেই জমির ক্ষতিপূরণের টাকা গ্রহণ করেননি।
এদিকে, ২০০৯-২০১০ সালের অনুমোদন পাবার পর এবং জমি অধিগ্রহণের পর যথারীতি কাজ শুরু করে দেয় রেলনিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা। খানা জংশন থেকে বোঁয়াইচণ্ডী পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় তৈরী হয় বিশালাকার পিলার। খোদ দামোদর নদের ওপর তৈরী হয় প্রায় ১৪টি পিলার। কিন্তু তারপরে আর কাজ এগোয়নি। এদিকে জমি অধিগ্রহণ হওয়ার পর চাষীদের রীতিমত উর্বর দুই ও তিন ফসলি জমিও গেছে নষ্ট হয়ে।

এলাকার চাষী কমল মল্লিক, নীলমণি ঘড়ুই প্রমুখরাও জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও এখনও তাঁরা জমির ক্ষতিপূরণবাবদ কোনো টাকাই পাননি। নীলমণি ঘড়ুই জানিয়েছেন, তিনি ২ বিঘে জমি দিয়েছেন। কমল মল্লিক দিয়েছেন প্রায় আড়াই বিঘে জমি। সমস্ত জমিই দুই ও তিনফসলি উর্বর জমি। এখনও টাকা না পাওয়ায় তাঁরা রীতিমত অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। কারণ জমির টাকা পেলে তাঁরা বিকল্প কিছু করতে পারতেন। আর টাকা না পাওয়ায় তাঁরা জমি হারিয়ে এখন সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছেন। এদিকে, চলতি কেন্দ্রীয় বাজেটে এই খানা জংশন বোঁয়াইচণ্ডী রেলপথের বিষয়ে কোনো উচ্চবাচ্যই করা হয়নি। ফলে গভীর সংকটই নয়, কার্যতই খানা জংশন – বোঁয়াইচণ্ডী নয়া রেলপথ এখন বিশ বাঁও জলেই।