

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ইংরেজদের বিরুদ্ধে চলছে বিদ্রোহ। দেশকে স্বাধীন করার জন্য গান্ধীজী ডাক দিয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের। গোটা দেশ উত্তাল। সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা আন্দোলনের সহযোগী হিসাবে সামনে দাঁড়িয়েছিলো জামালপুরের গোপালপুর গ্রাম। শুধু ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই নয়, ইংরেজদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতাকে স্মরণীয় করে রাখতে গোপালপুর গ্রামের সেদিনের গান্ধীজী অনুগামীরা গড়ে তুলেছিলেন মুক্তকেশী বিদ্যালয়। ইংরেজদের তৎকালীন ট্রাডিশান ভাঙতে রবিবারের ছুটি বাতিল করে পুরোদমে স্কুল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেদিনের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতারা।এই ভাবেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। বাতিল করা হয়েছিল ইংরেজী শিক্ষাকেও। যদিও পরবর্তীকালে সময়ের চাহিদায় ইংরাজী পড়ানো শুরু হয়।

আগামী ২০২১ সালে এই গোপালপুর মুক্তকেশী উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষে পা দিতে চলেছে। কিন্তু সেই স্কুল আজ গভীর সংকটের মুখে। একদিকে ভেঙে পড়ছে স্কুলের ভবন, অন্যদিকে, স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে ৯০০ ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে রীতিতম অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন স্কুলের পরিচালন কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, গত ২০১৪ সালে ভূমিকম্পের ফলে স্কুলের একপ্রান্তে একটি ভবনের ৬টি ঘর ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সম্প্রতি সরকারী আর্থিক অনুদানে সেই ভবনের জায়গায় নতুন করে গৃহনির্মাণ শুরু হলেও, এখনও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। যা নিয়ে তাঁরা সমস্যায় রয়েছেন। এরই মাঝে গত ১২ সেপ্টেম্বর আচমকাই তাঁরা লক্ষ্য করেন স্কুলের অপর আরও একটি ভবন ক্রমশই হেলে পড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে বিডিও, স্কুল পরিদর্শক, স্থানীয় প্রধানকেও।
প্রশাসনিক অধিকারিকরাও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে গেছেন। পাঠানো হয়েছে বিশেযজ্ঞদেরও। ফলে এখন ৯০০ ছাত্রছাত্রীকে ঠাসাঠাসি করে ক্লাস করতে হচ্ছে পরিবর্ত ব্যবস্থায়। তাপসবাবু জানিয়েছেন, ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার অন্তর্গত গোপালপুর মুক্তকেশী উচ্চ বিদ্যালয়। তৎকালীন সময় গান্ধীজীর অহিংস আন্দোলনের সমর্থনে, গান্ধীজীর মতাদর্শ মেনে পরিচালিত হয় বিদ্যালয়। বৃটিশ বিরোধিতা করাই মূল লক্ষ্য ছিল এই বিদ্যালয়ের। আজও সেই প্রথার অন্যতম রবিবার পুরোদমে খোলা থাকে স্কুল। পরিবর্তে সোমবার ছুটি দেওয়া হয়। বর্তমানে ১৪ জন স্থায়ী শিক্ষক ও ৩ জন অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে চলছে পঠন-পাঠন। যদিও বিডিও সার্বিক বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।